1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

বাংলায় মমতা সরকারের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে, বাঁকুড়ায় তোপ অমিত শাহের

  • Update Time : শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০২০
  • ১৬৯ Time View

বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:বাঁকুড়ায় এসে রীতিমতো রণংদেহী মেজাজে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘পশ্চিমবাংলায় মমতা সরকারের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দুই তৃতীয়াংশ আসনে জিতে রাজ্যে সরকার গড়বে বিজেপি।’ অমিত শাহের এই বক্তব্য বাংলার রাজনৈতিক মহলকে মনে পড়িয়ে দিয়েছে ব্রিগেডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাম বিরোধী সমাবেশের কথা। ওই সমাবেশে লক্ষ লক্ষ জনতার সামনে মমতা মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে ছিলেন বাম সরকারের। যদিও তাতে বাম সরকারের পতন ঘটেনি। তবে মমতার আন্দোলনের কাছেই শেষ পর্যন্ত হার স্বীকার করতে হয়েছিল বাম সরকারকে। শুক্রবার দুপুরে বাঁকুড়ার সভায় তেমন মৃত্যুঘণ্টা না থাকলেও মুখেই সেই ঘণ্টার কথা বলে সেই সময়কে যেন মনে করিয়ে দিলেন বিজেপির দোর্দণ্ডপ্রতাপ শীর্ষনেতা অমিত শাহ।

এদিন অমিত শাহ রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, ‘বাংলায় বিজেপি কর্মীদের যে ভাবে খুন করা হচ্ছে, যে ভাবে এই কর্মীদের ওপর শাসক দলের দমনপীড়ন চলছে, তাতে পরিষ্কার, রাজ্যে তৃণমূল সরকারের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে।’ তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই বাংলায় পরিবর্তন আসবে। তার পর আমরা সবাই মিলে সোনার বাংলা গড়ে তুলব। যে বাংলা আগের বাম সরকার গড়ে তুলতে পারেনি। পারেনি এই তৃণমূল সরকারও।’ অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘ভোটের রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তাই অনুপ্রবেশকারীদেরও তোষণ করছে। সেই কাজে ব্যবহার করছে পুলিশকেও। তাই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিষয়টা বড়ই উদ্বেগের।’ যদিও এর পাশাপাশি তিনি এ কথাও বলেন, ‘অবশ্য সেইজন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি সতর্ক রয়েছে। আমরাও কড়া নজর রেখেছি। তবে রাজ্য সরকার নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে সেভাবে সহায়তা করছে না।’ বাঁকুড়ার সভা থেকেই বিজেপির রাজ্য নেতা ও কর্মীদের সামনে ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেন তিনি। পরিষ্কার জানিয়ে দেন, বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপিকে কমপক্ষে ২০০টি আসনে জিততেই হবে। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন অরবিন্দ মেনন, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অনুপম হাজরা, সৌমিত্র খাঁ প্রমুখ।

শুক্রবার দুপুরের সভা শেষ করে বিকেল তিনটে নাগাদ বাঁকুড়া শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে চতুরডিহি গ্রামে এক আদিবাসী পরিবারের বাড়িতে দুপুরের খাবার খান। বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য দুপুরের খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, ডাল, আলু পোস্ত, করলা ভাজা, পটল ভাজা, বেগুন ভাজা, শাক ভাজা, পোস্ত বড়া, কুমড়োর ঝাল আর চাটনি ও পায়েস। শেষে দেওয়া হয় বাঁকুড়ার ঐতিহ্য মেচা সন্দেশও। মন্ত্রীকে খাবার পরিবেশন করেন বিভীষণ হাঁসদার স্ত্রী। খাওয়া শেষ হলে আদিবাসী রীতি অনুযায়ী মন্ত্রীর মুখ মুছিয়ে দেন এক আদিবাসী কন্যা। মন্ত্রীকে খাইয়ে খুবই খুশি বিভীষণ। তবে এতটাই আবেগতাড়িত ছিলেন যে, নিজের বা পরিবারের জন্য মন্ত্রীর কাছে কিছুই চাইতে পারেননি তিনি। এদিকে, তিন বছর আগে উত্তরবাংলার নকশালবাড়িতে গিয়ে যে গরিব আদিবাসী বাড়িতে দুপুরে খেয়েছিলেন অমিত শাহ, শুক্রবার বাঁকুড়ায় আর এক আদিবাসী পরিবারে অমিত শাহের খাওয়ার দিনই নকশালবাড়ির সেই বাড়ির গৃহকর্ত্রী গীতা মাহালিকে সরকারি চাকরি দিল রাজ্য সরকার। রাজনৈতিক মহলের মতে, এটা কেন্দ্রীয় বিজেপিকে রাজনৈতিক চাল দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি অবশ্য বলেছে, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা পিকের বুদ্ধি। তবে কাজ হবে না। ভোটের জন্য এ ভাবে মানুষ কিনতে চাইছে এই সরকার। না হলে এতদিন চাকরি দেয়নি কেন? লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন, এই সরকার তাদের কাজ দেয় না কেন?

বৃহস্পতিবার রাতে দু’দিনের রাজনৈতিক সফরে কলকাতায় আসেন অমিত শাহ। এসেই বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়দের তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, বাংলায় ইতিমধ্যে তিনি সমীক্ষা করিয়েছেন। এই রাজ্যে বিজেপির জেতার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। সেইজন্য সর্বশক্তি নিয়ে নেতাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে তিনি নির্দেশ দেন। সেখানেই মুকুল রায় পরিষ্কার বলেন, ‘বাংলায় পুলিশরাজ চালাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা পুলিশ সুপারদের অনেকেই তৃণমূল জেলা সভাপতির মতো কাজ করছেন। মানুষ এখন এই সরকার ও পুলিশকে ভয় পাচ্ছে। তাই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে ভোট করা ছাড়া মানুষকে নিরপেক্ষ ভাবে ভোট দেওয়ানো সম্ভব নয়।’ কিন্তু, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করলে তৃণমূল কি মানুষের সহানুভূতি পেয়ে যেতে পারে? অমিত শাহের প্রশ্নের জবাবে মুকুল বলেন, ‘সেই সম্ভাবনা নেই। দুর্নীতি আর খুনোখুনিতে এই রাজ্যে ভয়ঙ্কর বাতাবরণ তৈরি করেছে তৃণমূল সরকার। মানুষ অতিষ্ঠ। তাই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করলে রাজ্য সরকার মানুষের কোনও সহানুভূতি পাবে না।’ তাঁকে সমর্থন করেন কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা ছাড়া পশ্চিমবাংলায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

শুক্রবার সাংবাদিকদের অমিত শাহ বলেন, ‘আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তাই কেন্দ্রের কোনও প্রকল্পকেই রাজ্যে বাস্তবায়িত হতে দিচ্ছেন না। কমপক্ষে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ৮০ শতাংশ টাকা রাজ্য সরকার আটকে রেখে দিয়েছে।’ পরে কর্মীদের বলেন, ‘বাংলায় অপশাসন চলছে। এই সরকারকে উখাড়কার ফেক দিজিয়ে।’ এই সমালোচনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভালো লাগেনি। পরে এদিন সন্ধ্যায় কলকাতায় সাংবাদিকদের তিনি অমিত শাহের নাম না করে বলেন, ‘উঠাকে ফেক দো মানে কী? ভদ্রতার সীমা রাখুন। আমি হিন্দি জানি। আমিও যদি বলি, উঠাকে ফেক দো, ভালো লাগবে?’ যদিও রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, উঠাকে ফেক দো শুনতে ভালো লাগে না। কিন্তু অমিত শাহ সে কথা বলেননি। তিনি বলেছেন, উখাড়কার ফেক দিজিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছেন।

অমিত শাহের সভার পরে এক এক করে তৃণমূলের অনেক নেতাই মুখ খোলেন। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে রোজ বহু দলিত ধর্ষিত হচ্ছেন, বিজেপি শাসিত অন্য রাজ্যগুলিতেও আদিবাসীদের ওপর অত্যাচার চলছে। সে সব চাপা দেওয়ার জন্য বাংলায় এসে নাটক করছেন অমিত শাহ।’ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘অমিত শাহ কী বললেন, তাতে কিছু আসে যায় না। পশ্চিমবাংলায় তৃণমূলকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসার দিবাস্বপ্ন দেখছে বিজেপি। ওই স্বপ্ন কোনও দিন সফল হবে না।’ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘বাংলার মানুষ বোকা নন। গুজরাটের মানুষকে বাংলা মেনে নেবে? এটা হতে পারে নাকি? বাংলার মানুষের হাত–পা আছে। গুজরাট থেকে লোক আনার কোনও দরকার নেই।’ পাশাপাশি অমিত শাহকে ‘বাংলা বিরোধী’ বলে প্রচার চালাবে তৃণমূল। এদিন শাসক দলের তরফে এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..